Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Wigete

ডায়বেটিস কেন হয় এবং এর লক্ষন গুলো কি কি? কিভাবে ডায়বেটিস সারাবেন?

 

ডায়বেটিস কেন হয় এবং এর লক্ষন গুলো কি কি? কিভাবে ডায়বেটিস সারাবেন?

আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো > ডায়বেটিস কি?
> ডায়বেটিস এর লক্ষন গুলি কি কি?
> ডায়বেটিস এর প্রকারভেদ এবং কারণ সমূহ এবং > ডায়বেটিস কি সারানো যায়? এসব বিষয় সম্পর্কে     আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো।


তাহলে আসুন আমরা ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।


ডায়াবেটিসের এখন একটি সর্বজনীন সমস্যা। ডায়াবেটিস এর একটা সাধারণ অর্থ হচ্ছে আমাদের রক্তে প্রয়োজনের তুলনায় সুগার বা শর্করা বেড়ে যাওয়া।


শরীরে পাইলস বা অর্শ রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ঘরোয়া উপায়পাইলস বা অর্শ রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ঘরোয়া উপায় ইনসুলিন নামক হরমোনের অভাব ঘটলে, ইনসুলিনের কাজের ক্ষমতা কমে গেলে অথবা উভয়ের মিলিত প্রভাবেই রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় তখন তাকে ডায়াবেটিস বলে।


আরো পড়ুন.......

ডায়াবেটিস একটি বিপাক জনিত রোগ। ইনসুলিন হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলোযোগ সৃষ্টি হয়। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং পরবর্তীতে তা প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে আসে। সামগ্রিক ভাবে এটাই ডায়াবেটিস


একজন সাধারণ মানুষের শরীরে অভুক্ত অবস্থায় ৬.১ মিলিমোল এর নিচে এবং খাবারের ২ ঘন্টা পরে ৭.৮ মিলিমোল এর নিচে শর্করা থাকে।

কোন ব্যক্তির রক্তের সুগার বা শর্করার মাত্রা এর বেশি যখন হয় তখন তার ডায়াবেটিস হয়েছে ধরে নিতে হবে।

 

মনে রাখবেন ডায়াবেটিস কোনো সংক্রামক বা ছোয়াচে রোগ নয়।


ডায়াবেটিসের লক্ষণ সমূহ :-

ডায়াবেটিস হলে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা যায়।

> ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

> পানি পিপাসা বেশি বেশি লাগবে।

> শরীরে ক্লান্তি ও দূর্বলতা অনুভূত হবে।

> বেশি বেশি ক্ষুধা পাবে।

> স্বাভাবিকভাবে খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমতে থাকবে।

> যেকোনো ধরনের ক্ষত শুকাতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি দেরি হবে।

> নানান রকম চর্মরোগ যেমন খোশ পাঁচড়া, ফোঁড়া ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

> দৃষ্টিশক্তি কম দেখা বা দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।



ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ :-


ডায়াবেটিস সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে

১। টাইপ-১ ডায়াবেটিস,
২। টাইপ-২ ডায়াবেটিস,
৩। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস


টাইপ-১ ডায়াবেটিস

এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। এ রোগে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়।

শিশু ও তরুণদের মধ্যে এ ধরনের বহুমূত্র রোগ বেশি হয়। সাধারণত ১০ - ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এ ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়।


এই ধরনের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন বা ইনসুলিন পাম্প নিতেই হয়। অন্যথায় রক্তের শর্করা অতি দ্রুত বেড়ে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই রক্তে অম্লজাতীয় বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। যা মূলত জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। ( ডায়াবেটিস কি বংশগত রোগ ) 


টাইপ-২ ডায়াবেটিস

টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে কিছু  ইনসুলিন তৈরি হয়। তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় অথবা রোগীরা শরীরে যে  ইনসুলিন উৎপন্ন হয় তাকে ব্যবহার করতে পারে না।


টাইপ-২ বহুমূত্র রোগের পেছনে থাকে মূলত ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৩০ বছরের উপরে হয়ে থাকে।


সাধারণত এই ধরনের রোগীরা ইনসুলিন নির্বর নন। সাধারনত এই ধরনের রোগীরা স্থুলাকার হয়। খাদ্যাভাসের পরিবর্তন ও নিয়মিত ব্যায়ামের সাহায্যে একে প্রথমে মোকাবিলা করা হয়


তবে অনেক সময় প্রয়োজন হয় মুখে খাওয়ার ওষুধ এমনকি ইনসুলিন ইঞ্জেকশন। মিষ্ট ও মিষ্টি জাতীয় পানিও টাইপ-২ ডায়বেটিস এর ঝুকি বাড়ায়।


শারীরিক পরিশ্রম না করাও টাইপ-২ ডায়বেটিস এর অন্যতম কারণ। খাবারে চর্বির ধরনও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


স্যাচুরেটেড ফ্যাট ট্রান্সপ্রেন্ট ঝুঁকি বাড়ায়। পক্ষান্তরে পলিআনস্যাচুরেটেডমনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ঝুঁকি কমায় অত্যাধিক পরিমাণ সাদা ভাত খাওয়া ডায়াবেটিসের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


গর্ভকালীন বা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস

অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে কিন্তু প্রসবের পর ডায়াবেটিস আর থাকে না। এই প্রকার জটিলতাকেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়।

গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস গর্ভবতী নারী, প্রসূতি কিংবা সদ্য প্রসূত শিশু সকলের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে।

বিপদ এড়ানোর জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় রোগীকে প্রয়োজনে ইনসুলিনের মাধ্যমে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার হতে পারে। গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন প্রয়োজন হয়।

রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখার জন্য যদি এই ইনসুলিন তৈরিতে শরীর অক্ষম হয় তাহলে ওই গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় অর্থাৎ মাতৃত্বকালীন বা  গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়। মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসের জন্য প্লাসেন্টাল হরমোনও দায়ী।

অন্যান্য সুনির্দিষ্ট কারণ ভিত্তিক ডায়াবেটিস


১। জেনেটিক বা বংশগত কারণে ইনসুলিন তৈরী কম হলে।

২। জেনেটিক বা বংশগত কারণে ইনসুলিন কার্যক্ষমতা কমে গেলে।

৩। নানান ধরনের সংক্রামক ব্যাধির কারনে।

৪। অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগের কারনে।

৫। ঔষধ ও রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শে আসলে।

৬। অন্যান্য হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে।

৭। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে।


ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণসমূহ :-

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে যে কোন অজানা কারণে প্যানক্রিয়াসের বেটা সেল ( Beta Cell ) ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। এর ফলে ইনসুলিন তৈরিতে প্যানক্রিয়াস সম্পূর্ণ অথবা আংশিক ভাবে ব্যাহত হয়।


ইনসুলিনের অভাবের কারণে রক্তের গ্লুকোজ আমাদের শরীরের বিপাক ক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে না। এর ফলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়।


যে কেউ যেকোনো বয়সের যে কোন সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন তবে নিম্নোক্ত শ্রেণির ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।


জেনেটিক কারণঃ- যাদের বংশে বিশেষ করে বাবা-মা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়-স্বজনের ডায়াবেটিস আছে।


শারীরিক কারণঃ- যাদের ওজন বেশি যারা ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন। যারা বহুদিন ধরে কর্টিসোল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন। যেসব মহিলার গর্ভাবস্থায় ডায়েবেটিস ছিল। যাদের রক্তচাপ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকে।


যেসব অবস্থায় ডায়াবেটিস প্রকাশ পাবার সম্ভাবনা থাকেঃ-

সাধারণত -

১. শারীরিক স্থুলতা
২. গর্ভাবস্থা
৩. ক্ষত
৪. আঘাত
৫. অস্ত্রোপচার
৬. মানসিক বিপর্যয়
৭. রক্তনালীর অসুস্থতার কারণে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের রোগ হলেডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।


প্রশ্ন হচ্ছে ডায়াবেটিস কি একেবারে সারানো যায়?

ডায়াবেটিস রোগ একেবারে সারে না। এ রোগ  সারাজীবনের, তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এবং সঠিক মত খাবার দাবার গ্রহণ করলে খুব ভালোভাবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই জীবন-জাপন করা সম্ভব।



আশা করি আজকের আলোচনার মাধ্যমে ডায়বেটিস সম্পর্কে সকলকে একটি সম্পূর্ণ ধারনা দিতে সক্ষম হয়েছি। সকলকে অনেক ধন্যবাদ শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য।

আরো জানুন :







Post a Comment

0 Comments