Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Wigete

পায়ের পেশিতে টান পড়লে কী করবেন? পায়ে জ্বালা, পোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায়।

 পায়ের পেশিতে টান পড়লে কী করবেন?

পায়ের পেশিতে টান পড়লে কী করবেন? পায়ে জ্বালা, পোড়া কমানোর ঘরোয়া উপায়।


আজকের এই লেখাটি থেকে আমরা জানবো হঠাৎ করে পায়ের পেশিতে প্রচন্ড টান লাগা, জয়েন্ট এর মধ্যে ব্যথা হওয়া বা কট কট করে শব্দ হয়, এমনকি বসতে গেলে দাঁড়াতে না পারা, পায়ের বা দেহের যে কোন অংশে ব্যথার জন্য ফুলে লাল হয়ে যাওয়া এইসব কেন হয়? ( পায়ের শিরায় টান ) 


পায়ের তালুতে জ্বলতে থাকে এমনকি পা বা হাতের মধ্যে ঝিন ঝিন করে। এটা কেন হয়?


অনেকেই বুঝতে পারেন না। এই কেন হয় এর কারণ জানার পাশাপাশি আমরা জানবো এই সব রোগ দূর করার উপায় কি? কিভাবে আমাদের দেহের এই সকল রোগকে আমরা প্রতিরোধ করতে পারবো?


আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো আজকের  এই আর্টিকেলটি অবশ্যই সম্পূর্ণ খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলের প্রতিটি কথাই যাদের এই ধরনের সমস্যা আছে তাদের খুবই কাজে লাগবে।


বন্ধুরা এই ধরনের সমস্যার শুরুটা প্রধানত পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে প্রথম দেখা দেয়। এরপর থেকে প্রচন্ড প্রদাহ হতে থাকে এবং ব্যথা হয়। অস্থি সন্ধিতে লাল হয়ে যায় এবং ব্যথা ফুলে যায়।


বাত বলে বা মাশেল পেইন বলে একে আমরা চিহ্নিত করে থাকি। আঙ্গুল নাড়াতে তীব্র ব্যথা হয়। অনেক সময় যাদের এই ধরনের ব্যথা হয় তারা যেকোন হালকা হাতের স্পর্শে ব্যথা পেয়ে থাকেন। এর লক্ষণ গুলো এতই দ্রুত দেখা যায় যেন শুরুটা হলে আপনার কোনো না কোনো স্থানে প্রচন্ড ব্যথা হতে থাকে।


কখনো কখনো ব্যথা দুই থেকে তিনটি স্থানে ও দেখা যায়। যদি এরকম হয় তাহলে আপনি মনে করবেন যে আপনার অবশ্যই এই রোগের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে দেওয়া টিপসগুলো মানা খুবই জরুরী।( পায়ের শিরায় ব্যাথা ) 


এই সমস্যাগুলো কেন হয় আর কখন বেশি হয়?


তখনই বেশি হয় যখন একজন মানুষ পরিশ্রম করেন না সব সময় শুয়ে বসে কাটিয়ে দেন এমনকি তার কাজ হয়ে থাকে সার্বক্ষণিক বসে বসে করা। কায়িক পরিশ্রম খুবই কম হয়ে থাকে যখন তখনই এই ধরনের সমস্যা গুলো বেশি হয়ে থাকে।


যখন কেউ ঘুমাতে যাচ্ছেন এবং দীর্ঘ সময় একই ভাবে শুয়ে থাকছেন তখন এই সমস্যা বেশি হতে পারে। তার মানে এই নয় যে রাতে ঘুমানোর কারণে আপনার এই সমস্যা হচ্ছে আসল কথা হলো ব্যায়াম না করা, শারীরিক কসরত না করা, দেহের অতিরিক্ত ওজন ঠিকমতো খাবার গ্রহণ না করা, সঠিকভাবে না ঘুমানো এবং অতিরিক্ত ফাস্টফুড বা তেল জাতীয় খাবার গ্রহণ করা।

আরো পড়ুনঃ


বেশি মাত্রায় শর্করা খাওয়া এমনকি লবণাক্ত জিনিস বেশি খেলেও এই ধরনের সমস্যা গুলো বেড়ে যায়। এই ধরনের পায়ের ব্যথা বা অস্থিসন্ধির ব্যথাগুলো যে কোন সময় হতে পারে। এমন হতে পারে যে আপনি হাঠছেন হঠাৎ করে পায়ের পেশিতে বা রগে টান লাগতে পারে।


বসে আছেন বা শুয়ে আছেন হঠাৎ করে উঠতে গেলেও খঁজ করে টান লাগতে পারে। এমনকি সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামার সময়ও প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে পারে। কেউ দৌড়াচ্ছেন দৌড়ানোর সময় পায় বা কোমরের জয়েন্টে হঠাৎ করে টান লেগে ব্যথা আরম্ভ হতে পারে।


এই ধরনের সমস্ত ব্যথা দূর করার জন্য আপনাকে কয়েকটি ধাপে এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনুসরণ করতে হবে। (পায়ের রগে টান লাগার কারণ)


কখনো কখনো এই ধরনের সমস্যা গুলো হওয়ার পরে কয়েক মিনিট মাত্র স্থায়ী হয়। আবার কখনো কখনো এটা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এমন ব্যথা এমন টান লাগার অনুভূত হওয়ার বারেবারেই হতে থাকে।


তখন আপনি কি করবেন?

যাদের ওজন বেশি হওয়ার কারণে সম্পূর্ণ শরীরের ভার পায়ের উপরে পড়ার কারণে পায়ে ব্যথা বা পেশিতে ব্যথা হচ্ছে এমনকি যারা শারীরিক ব্যায়াম বা কসরত না করার কারণে এই ধরনের রোগের ধীরে ধীরে বেশি জর্জরিত করছেন তাদের জন্য এটা স্বাভাবিক।

কিন্তু যারা শারীরিক ব্যায়াম বা কসরত করার পরেও ইয়োগা করার পরেও এই ধরনের ব্যথায় আক্রান্ত হচ্ছেন তারা কেন হচ্ছেন?


এর কারণ হলো সঠিক বা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা। হ্যাঁ বন্ধুরা ডিহাইড্রেশন শরীর ব্যথার অন্যতম একটা কারণ। আবার যাদের দৈনিকের খাবারে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের ঘাটতি থাকে তাদেরও এই ধরনের সমস্যা গুলো হতে থাকে।


যদি কেউ হাই ব্লাড প্রেসার, হাই কোলেজটোরেল এবং ডায়াবেটিসের জন্য ঔষধ সেবন করেন তাদের এই ধরনের ব্যথা হওয়া স্বভাবিক। সকল সমস্যা দূর করার জন্য প্রথমেই যে কথাটি বলব তা হলো মালিশ করা। হ্যাঁ বন্ধুরা মালিশ করতে হবে।


কিন্তু কি দিয়ে মালিশ করবেন আর কিভাবে করবেন, কতক্ষণ করবেন, কখন করবেন?


(পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথার ওষুধ)

সেটাই সবচেয়ে বড়কথা। মালিশ করতে হবে অলিভ অয়েল দিয়ে অর্থাৎ আপনাকে এক্সট্রা ভার্জিন খাঁটি অলিভ অয়েল নিতে হবে। এই অলিভ অয়েল এবং ল্যাভেন্ডার অয়েল একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে।


অলিভ অয়েল যে কোনো শপে, যেকোনো দোকানে আপনি পেয়ে যাবেন এবং ল্যাভেন্ডার অয়েলও আজকাল যেকোনো শপে অর্থাৎ সুপারশপে বা অনলাইনে খোজ করলেও যে কেউ কিনতে পারবেন।


মালিশ করার জন্য লাগবে পাঁচ চামচ অলিভ অয়েল এবং দুই থেকে তিন ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল একত্রে মিশিয়ে নিয়ে হালকা গরম করতে হবে। গরম করার পরে এই তেল সমস্ত ব্যথা স্থানে অথবা সমস্ত দেহের মালিশ করতে হবে। খুব ভালোভাবে মালিশ করবেন।


অবশ্যই রাতে ঘুমাতে যাবার আগে এবং আরও যদি সম্ভব হয় তাহলে দিনের মধ্যে দুই তিনবার করে এই মালিশ নিতে হবে। কিন্তু বন্ধুরা রাতে ঘুমাতে যাবার আগে মালিশ অবশ্যই আপনাকে করতে হবে।

এই মালিশ করতে হবে একেকবার একেক পায়ে আট থেকে দশ মিনিট করে ভালো করে হাতের তালু দিয়ে ডলে ডলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সার্কেল করে এই মালিশ করতে হবে। যাতে দেহের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় আর রক্তসঞ্চালন বেড়ে গেলে এই সকল ব্যথা দূর করা সম্ভব।


কোমরে বা দেহের অন্যান্য স্থানেও যে ব্যথা রয়েছে পিঠে বা মেরুদন্ডের হাড়ের একইভাবে মালিশ করতে হবে মালিশ করার কারণে রাতের ঘুম খুব ভালো হবে।

সকালে উঠে মনে হবে যে আপনার ব্যথা অনেকটা কমে গেছে। এরপর সারাদিনে যদি আরো দুই থেকে তিনবার মালিশ নিতে পারেন তাহলে ব্যথার অনুভূতি একেবারেই আর থাকবে না।


বন্ধুরা পায়ের পেশিতে যদি প্রচন্ড ব্যথা হতে থাকে পায়ের তালু জ্বালাপোড়া করতে থাকে এমনকি ব্যথার জন্য আংগুল নাড়াতে না পারেন, এমনকি লাল হয়ে ফুলে যেয়ে এক্ষেত্রে সন্ধর্ব লবন বা রকসল্ট খুব ভালো কাজ করবে।

এই সকল ব্যথা দূর করার জন্য একটি পাত্রে পানি নিতে হবে। এমন ভাবে পানি নিতে হবে যাতে আপনি পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। সেই পানির পাত্রে আর পানি হতে হবে এমন গরম যাতে আপনি পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন।


সেই গরম পানির ভেতরে আপনাকে দুই থেকে তিন চামচ সন্ধর্ব লবণ মিশিয়ে দিতে হবে। এই
সন্ধর্ব লবণ আপনি যে কোনো মুদি দোকানে বা সুপারশপে খোঁজ করুন। সন্ধর্ব লবণ অথবা রকসল্ট মেশানো পানিতে পা ডুবিয়ে রাখতে হবে ১০ থেকে ১২ মিনিট।


অবশ্যই এই কাজটি করতে হবে রাতে
মালিশ নেবার আগে। রাতে মালিশ নেবার আগে যদি পা এভাবে ডুবিয়ে রাখেন এবং তারপরে পা ভালো করে করে মুছে নিয়ে মালিশ নেওয়া শুরু করেন তাহলে তা সবচেয়ে ভালো কাজ করবে।


যারা এই ব্যথার সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে আক্রান্ত এবং কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না তাদের বলব এভাবে আপনি পা সন্ধর্ব লবন মিশানো পানিতে ডুবিয়ে রাখুন এবং মালিশ করুন যদি সম্ভব হয় তাহলে দিনে দুই থেকে তিনবার ডুবিয়ে রাখতে হতে পারে যে আপনি গোসল এর আগেও একবার এইভাবে পা ডুবিয়ে রাখছেন।


এতে করে আপনার সারাদিনেও আর কখনো ব্যথা বোধ হবে না। এর সাথে সাথে সারাদিনে সঠিকভাবে এবং সঠিক পরিমাণে পানি পান তো আপনাকে অবশ্যই করতে হবে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ধীরে ধীরে ১ লিটার হালকা গরম পানি পান করুন। এছাড়া দিনে আরো দুই লিটার পানি পান করতে হবে। সম্ভব হলে সবসময় পানি হালকা গরম করে পান করুন।


সবচেয়ে ভালো হয় যদি খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে এবং আধা ঘন্টা পরে আপনি পানি পান করেন এই পানি পান খাওয়ার সময় করার কারণে পেটে অত্যাধিক গ্যাসের সৃষ্টি হয়। গ্যাস বা এসিডিটি থেকেও দেহের ব্যথার সৃষ্টি হয়। যদি আপনার পিত্ত রোগ বেড়ে যায় তাহলে এর কারণে বাত রোগও বৃদ্ধি পাবে।


এজন্যই আমাদের এমনভাবে খাবার-দাবার গ্রহণ করতে হবে যাতে কখনো পেটের গ্যাস এসিডিটির তৈরি না হয় এজন্য বেশি করে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন ব্রকলি বা বাঁধাকপি খেতে পারেন আবার ওমেগা থ্রী ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন সামুদ্রিক মাছ, মিঠা পানির মাছ, কাঠ বাদাম, আখরোট, সাদা তিল, সবুজ শাক ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রী ফ্যাটি এসিড।


এছাড়া খেতে পারেন কাঁচা রসুন, জাম, কাঁচা হলুদ, কাঁচা আদা এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার। যেমন লেবু খেতে পারেন কমলা, মাল্টা এই ধরনের খাবার গুলো যদি খান তাহলে এই রোগ দ্রুত দূর হবে।


আবার এই ঋতুতে যেমন আমলকি পাওয়া যায় যদি প্রতিদিন একটি করে জলপাই বা আমলকি খেতে পারেন তাতে ও খুব ভালো উপকার পাবেন। আর আছে শিমের বীজ, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, লাউয়ের বীজ, তিসি এই খাবারগুলো একসঙ্গে হালকা করে ভেজে বা হলকা রোস্ট করে কোটায় ভরে রেখে দিন।


দিনে বারে বারে এই খাবারগুলো অল্পমাত্রায় খুব ভালো করে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন। এর সাথে খেতে পারেন সাদা তিল এতেও দেহে খুব দ্রুত এই সকল ব্যথা দূর হবে।


এছাড়া রাতে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে যদি এই কিসমিস ভালো করে চিবিয়ে খেয়ে এই পানিটাও পান করে নেন তাহলেও এই ব্যথা দূর হবে। এমনকি এই সকল খাবার আপনার ডায়াবেটিস ও প্রতিরোধ করবে। ডায়াবেটিস দূর হয়ে গেলে আপনার দেহ থেকে এমনিতেই সকল রোগ বিদায় নেবে। 


রাতে ঘুমাতে যাবার আগে এক গ্লাস হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করলেও খুব দ্রুত উপকার পাবেন। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন যা এই সকল ব্যথা দূর করতে পারে এবং দুধে থাকা প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর সকল রোগ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে।


দিনে এক থেকে দুই মগ গ্রিন টি সেবন করুন। এছাড়া দিনে ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস করুন। সম্ভব হলে যোগাসন করুন এবং অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে রাতে ঘুমাতে হবে। রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমাতে একদম ভুলে যাবেন না। 


আপনার দৈনন্দিন জীবনের এই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, নিয়মিত মালিশ নেওয়া এবং লবণ পানিতে পা ডুবিয়ে রাখার এ প্রক্রিয়ায় আপনাকে সকল রোগ থেকে দূরে রাখবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে এই রোগে ভুগছেন তাঁরা এক টানা একমাস এইভাবে নিয়ম করে এসব উপায় গ্রহণ করুন। 


আর যাদের এখনই এই ধরনের সমস্যা হয়েছে তারা টানা ১৫ দিন ব্যবহার করুন। আশা করি এই লেখাটি আপনাদের কাজে লাগবে। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।

আরো জানুন :


Post a Comment

0 Comments